পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ছয়টি ভৌতিক স্থান, জীন-ভূতের ভয় সবাই করে। এমন কাউয়কে পাওয়া যাবে না যে জীবনে ভয় পায়নি বা পায়না! কখনো কি এমন জায়গায় গিয়েছেন যেখানে গেলে আপনার গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে যায় বা গা কাঁটা দিয়ে উঠে? অথবা ভয়ে থর থর করে কাঁপছেন বা হাঁপিয়ে যাচ্ছেন বা ভয়ে অতিরিক্ত গামাচ্ছেন!! গ্রাম্য এলাকার বাঁশ বাগান, বেত বাগান, ঝোপ-ঝাড়, পুরোনো বাঙ্গা বাড়ি গুলোতে একা একা রাতের অন্ধকারে হাঁটলে এরকম অনুভুতি হতে পারে। পৃথিবীতে অনেক বিখ্যাত ভয়ঙ্কর জায়গা আছে, তার মধ্য থেকে ১০ টি বেছে নিয়ে সেগুলোর যেখানে গেলে আপনার গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে যায় বা গা কাঁটা দিয়ে উঠবে। পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ছয়টি ভৌতিক স্থানস্মূহ নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরলামঃ
বোরলে রেকট, যুক্তরাজ্যেঃ

বোরলে রেকটরি নামটি যেমন অদ্ভুত জায়গাটিও তেমন ভয়ঙ্কর । বোরলে রেকটরি এটি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ভৌতিক স্থান হিসেবে পরিচিত, যুক্তরাজ্যের বোরলে গ্রামে অবস্থিত। ১৮৬৩ সালে Reverend Henry Dawson Ellis Bull এর জন্য এটি নির্মান করা হয়। এখানে অনেক সন্ধ্যায় নুন(Nun) কে হাটতে দেখা যায় যাকে প্রেট্রল মেরে হত্যা করা হয়েছিল। পুরোনো একটি গল্প প্রচলিত আছে যে নুন বোরলে সম্প্রদায়ের এক সন্ন্যাসীনীর প্রেমে পড়েছিলেন। দুজনে চেয়েছিলেন পালিয়ে যেতে কিন্তু ধরা পড়ে যায়। সন্ন্যাসীনীকে বধ করা হয় আর নুনকে পুড়িয়ে মারা হয় বোরলে রেকটরিতে এর পর থেকে এইটি ভয়ঙ্কর স্থান হিসেবে পরিচিত।
স্ট্যানলি হোটেল, যুক্তরাষ্ট্রঃ

পৃথিবীতে অসংখ্য ভূতের গল্প রয়েছে, তা স্টিফেন কিং এর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত The Shining হরর মুভিটি দেখলে বুঝা যায় ।
বইটি লেখার ক্ষেত্রে তাঁকে অনুপ্রানিত করেছিল স্ট্যানলি হোটেল যেটি কলোরাডোর এস্টেস পার্কে, যুক্তরাষ্ট্র-এ অবস্থিত। তিনি যখন এই হোটেলের একটি রুমে অবস্থান করেন তখন তিনি নিজেই অনেক ভৌতিক ঘটনার সম্মুখিন হন। তিনি শুনতে পেয়েছেন ভূতের ছেলেরা পাশের রুমে খেলা করছে! এবং দেখেছেন অনেক আত্মার আনাগোনা। যখন কোন গেস্ট আসতো তারা দেখতে পেত পিয়ানোর নিজ থেকে বেজে ওঠা, এবং মিউজিকের শব্দ। এই সকল ভৌতিক ঘটনার যারা সম্মুখিন হত তারা ক্ষতিগ্রস্থ হত।
টাওয়ার অব লন্ডন, যুক্তরাজ্যেঃ

টাওয়ার অব লন্ডন একটি বিখ্যাত ভৌতিক স্থান। ১৫৩৬ সালে হেনরি VIII এর একজন স্ত্রীকে টাওয়ার অব লন্ডনে শিরচ্ছেদ করা হয়। তারপর থেকে ঐ স্ত্রীলোকের আত্মাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যেত, মাঝে মাঝে নিজের খণ্ডিত মাথা হাতে নিয়ে টাওয়ার গ্রীন এবং টাওয়ার চাপেল রয়েলে হাটতেন, যা সত্যি খুবি ভৌতিক।
উডচেস্টার ম্যানশন, যুক্তরাজ্যেঃ

উডচেস্টার ম্যানশন ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ারে অবস্থিত এটি ভৌতিক বাড়ি হিসেবে পরিচিত। দালানটির নির্মান কাজ শেষ হয়নি, গত ২০০ বছর আগে শেষ বারেব মত এটির কাজ করা হয়েছিল। উডচেস্টার ম্যানশন নিয়ে গুজব আছে, যে এখানে যারা কাজ করতে আসে তারা অনাক্ষাঙ্কিতভাবে মারা যায়। অদ্ভুত নাকের শব্দ পাওয়া যায়, নির্মান কাজের শব্দের মত শব্দ পাওয়া যায়, রোমান সৈন্য এবং যুবতী রমণী দেখতে পাওয়া যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্যারিসের কাটাকম্ব, ফ্রান্সঃ

প্যারিসের কাটাকম্ব প্যারিসের একটি আণ্ডারগ্রাউন্ড অসারি (যেখানে মরা মানুষের মাথার খুলি, কঙ্কাল রাখা হয় ) এটি ফ্রান্সে অবস্থিত। ১৮১০ সালের এটি নির্মিত হয় । যারা ৩০ কমপক্ষে ৩০ বছর আগে মারা গেছে তাদের খুলি এখানে সংরক্ষন করা হয়, এখানকার খুলি, হাড়গুলো রাতের বেলা নিজে নিজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে বলে কথিত আছে।
দি স্কিরিড ইন, যুক্তরাজ্যেঃ

পৃথিবীর বিখ্যাত ভৌতিক স্থান গুলোর একটি হল ইংল্যান্ডের ওয়ালেস স্টেটের Llanfihangel Crucorney তে অবস্থিত দি স্কিরিড ইন। লোক গল্প মতে ৯০০ বছর আগে এখানে ১৮০ জনেরও বেশি লোককে সিঁড়ির বীমের সাথে ফাঁসি দেওয়া হয়। তখন ভবনের প্রথম তলা কোর্ট রুম হিসেবে ব্যবহার হত। এই ঘটনার পর থেকে এখানে অনেক ভয়ঙ্কর ঘটনা হতে দেখা যেত, অনেক আত্নার আনাগোনা, ঠান্ডা কক্ষগুলো হঠাত করে গরম হয়ে যাওয়া, তাপমাত্রা হটাত বেড় যাওয়া। এসবের এর পর ফেনি প্রাইস(দালানটির মালিক) চিন্তা করলেন এখানে অনেক সক্রিয় আত্মা রয়েছে, অন্য সকল লোকজন এটাকে বিপদজনক স্থান হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন এখানে থাকা অনেক ঝুঁকিপূর্ন।
যারা জীন-ভূতের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান তারা এই ছয়টি ভৌতিক স্থান ভিজিট করতে ভুলবেননা।