বিদ্যুতমানব দিপক ১১ হাজার ভোল্টেজ বিদ্যুৎ প্রবাহিত করতে পারে তার শরীরে

বিদ্যুতের খুটি বেয়ে হঠাত একটি ছেলে উপরে উঠছে, আশপাশের মানুষ জড়ো হয়ে ছেলেটিকে থামানোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু সে থামছেনা। তাদের অনেকে ছেলেটিকে চেনে, তার নাম দিপক। তারা দিপককে নেমে আয় নেমে আয় বলে চিৎকার করছে এবং অনুরোধ করতে লাগল। তাদের ধারণা দিপক বিদ্যুতের খুটিতে আত্মহত্যার জন্য বেয়ে উঠছে।
এরই মধ্যে দিপকের মা খবর পেয়ে দৌড়ে আসল বাড়ি থেকে। দিপকের মা কান্না জুড়ে দিয়ে দিপককে ডাকতে লাগল, কিন্তু দিপকের থামাথামি নেই। সে খুটি বেয়ে উঠে গেল এবং বিদ্যুতের তার ধরে নাড়াচাড়া করতে লাগল। যে তার ধরে সে নাড়াচাড়া করছে সেই তারে ১১ হাজার ভোল্টস বিদ্যুত প্রবাহিত হচ্ছে। এই ১১ হাজার ভোল্টেজের তারের ৫ মিটারের পাশেও যদি কেউ দাড়ায় তাহলে তাকেও কাছে টেনে নিয়ে মুহুর্তে ভস্ম করে দেয়, কিন্তু তাতে দিপকের কিছুই হচ্ছেনা, সে বরং হাসছে। তাহলে কি তারে বিদ্যুৎ নেই!!! না বিদ্যুৎ আছে। কিন্তু দিপকের কিছু হচ্ছেনা এত উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুতের লাইভ তার স্পর্শ করার পরও। খুটির নিচে জড়ো হওয়া শত শত মানুষ বিস্ময়ে হতবাক হয়ে দেখছে দিপককে।
সত্যিই দিপকের এ অদ্ভুত ক্ষমতায় বিস্মিত সবাই। নিজের শরীরের ভেতর দিয়ে দিপক ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ প্রবাহিত করতে পারে এবং তাতে তার সামান্যতমও ক্ষতি হয়না। যেখানে মাত্রা ৫০ ভোল্টে একজন মানুষ বিদ্যুতায়িত হয় সেখানে কারোর শরীরে যদি ১১ হাজার ভোল্টস প্রবাহিত করা হয় তবে সে সাথে সাথে ভস্ম হয়ে যাবে। কিন্তু দিপক শুধু ১১ হাজার ভোল্টেজ নয়, একসাথে ৫শ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয় যে তারের মাধ্যমে সে তাও প্রতিরোধ করতে পারে এবং তাকে তা শক করেনা।
বিদ্যুৎ থাকা অবস্থায় সে বিদ্যুতের যেকোন মোটা তার জিহবায় লাগাতে পারে। মোটা লাইভ তার বালতির পানিতে ডুবিয়ে তার মধ্যে হাত চুবিয়ে রাখলেও তার কিছু হয়না। কোন কিছু অনুভব করেনা সে। গায়ের সাথে বিদ্যুতের সংযোগ লাগিয়ে দিপকের শরীরে বাল্ব ছোয়ালে তা জ্বলে উঠে।
দিপকের বাড়ি ভারতের হরিয়ানায়, তার বয়স ১৬ বৎছর। নিজের শরীরে বিদ্যুৎ প্রবাহের এ আশ্চর্য শক্তির পেছনে কোন রকম চেষ্টা বা সাধনার ইতিহাস নেই তার। দিপকের ভাষায় এটা ঐশ্বরিক দান। একদিন অসাবধানতাবশত তার শরীরে লাইভ বিদ্যুতের তারের ছোয়া লাগায় সে নিজের শরীরের এ আশ্চর্য ক্ষমতার কথা আবিস্কার করতে পারে।
দিপক জানান, আজ থেকে তিন বছর আগের কথা তাদের বাসার হিটারটি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দিপকের মা তাকে অনেকদিন ধরে এটি সারার জন্য বলেছিল। ইলেকট্রিশিয়ানের কাছে নিয়ে যাবার মত তাদের সামর্থ্য ছিলনা। তাই তার মা তাকেই সারার জন্য চেষ্টা করতে বলে। হিটার সারার সময় অসতর্কতাবশত লাইভ তারের সাথে তার আঙ্গুলের ছোয়া লাগে। কিন্তু দিপক তেমন কিছু অনুভব পারেনা। সে ভেবেছিল তাদের গ্রামে মনে হয় কারেন্ট নেই। কিন্তু বাইরে গিয়ে সে জানতে পারে তাদের গ্রামে কারেন্ট আছে। কারেন্ট আছে কিন্তু তারপরও বিদ্যুৎ কেন তাকে শক করলনা তা সে ভেবে পায়না। কয়েক দিন পর নিজের ভিডিডি প্লেয়ার সারার সময়ও তার হাতের ছোয়া লাগে তারের সাথে, সেদিনও সে কিছু অনুভব করেনা। এরপর সে ইচ্ছা করেই লাইভ তার স্পর্শ করে, সে বিস্মিত হয়ে যায় বিদ্যুৎ তাকে শক না করায় এবং নিশ্চিত হয়ে যায় বিদ্যুৎ তাকে শক করেনা।
তখনই দিপক বুঝতে পারে তার মধ্যে একটি অসম্ভব শক্তি বা ব্যতিক্রম কিছু একটা আছে। এরপর সে ধীরে ধীরে আরো অনেকবার লাইভ তার স্পর্শ করে। ক্রমে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোটা লাইভ তার স্পর্শ করে। যেসব তার অন্য কেউ স্পর্শ করলে সাথে সাথে মারা যাবার কথা সেখানে তার কিছুই হচ্ছেনা, কোন কিছুই অনুভব করেনা সে। এভাবে সে বুঝতে পারে তার মধ্যে স্থায়ীভাবে এ জিনিসটা বিদ্যমান রয়েছে। এরপর বিদ্যুতের যেকোন লাইভ তার বা যন্ত্রপাতি খালি হাতে ধরতে তার মধ্যে কোন ভয় কাজ করেনা। একের পর এক বিভিন্ন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লাইভ তার, বিভিন্ন ডিভাইস, বিদ্যুতায়িত যন্ত্রপাতি খালি হাতে স্পর্শ করে সে নিজের ভেতরকার এ শক্তি পরীক্ষা করে ।
তাকে জীবন্ত বাল্ব, বিদ্যু বালকসহ অনেক উপাধিতে ডাকে মানুষ। দিপক স্কুলে পড়ে, স্কুলের শিক্ষকরা তাকে ডাক্তারের কাছে যাবার পরামর্শ দেয়। ডাক্তাররা দিপকের রক্তের অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে কিন্তু অস্বাভাবিক কিছুই খুঁজে পায়নি তারা। বরং ডাক্তাররাও তার এ আশ্চর্য শক্তির কথা জানতে পেরে তার ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আরো অনেকে যখন দিপকের ছবি তোলে তখন দিপক নিজেকে বলিউডের সুপার স্টারদের সাথে তুলনা করে বেশ আনন্দ অনুভব করে। দিপক জানান সে ভারত সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগে ম্যানেজারের চাকরি করতে চায়।
দিল্লির বিদ্যুৎ প্রকৌশলী “গৌরব সিং” জানান, ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ তার কেউ স্পর্শ করলে সাথে সাথে সে ভস্ম হয়ে যাবে। এ তারের মাধ্যমে ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত দূরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় এবং ৫ মিটার দূরে দাড়িয়ে থাকলেও কাউকে টেনে নিয়ে বিদ্যুতায়িত করতে পারে এ তার।
দিপকের এ আশ্চর্য ক্ষমতা আবিষ্কারের পর আশপাশের কারোর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলেই ডাক পরে দিপকের। দিপক বিনামূল্যে তাদের কাজ করে দেয়। দিপক জানায় তার এ শক্তি ঐশ্বরিক। তাই পয়সা নিয়ে তার ঐশ্বরিক শক্তি নষ্ট করতে চায়না।
সূত্র : অনলাইন মিডিয়া।
2 thoughts on “বিদ্যুতমানব দিপক ১১ হাজার ভোল্টেজ বিদ্যুৎ প্রবাহিত করতে পারে তার শরীরে”